ডেস্ক রিপোর্ট: ফেনীতে দুবাই প্রবাসী মো: সোহেল (৩৫) কে কুপিয়ে ও গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যায় দায়েরকৃত আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মামলায় দুই শিশু সন্তান উদ্ধারসহ পলাতক আসামী স্ত্রী রোকেয়া আক্তার শিউলী (২৮) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
গত ২০ আগস্ট ২০২১ তারিখ ফেনী জেলার সদর এলাকায় দুবাই প্রবাসী মো: সোহেল (৩৫) কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। উক্ত ঘটনায় নিহতের মা নিরালা বেগম বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রীর রোকেয়া আক্তার শিউলিকে আসামী করে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (যার মামলা নং-৩৭/৪৭২, তারিখ- ২০/০৮/২০২১ইং)। এ ঘটনা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায়, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত মামলার আসামী কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় তার চাচার বাড়িতে অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা ছয়টায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার একমাত্র আসামী রোকেয়া আক্তার শিউলীকে গ্রেপ্তার করে। আটক শিউলি নিহত সোহেলের স্ত্রী ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের মুজিবুর রহমানের মেয়ে। পরবর্তীতে আসামী রোকেয়া আক্তার শিউলী’র দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি ফেনী জেলার নাজির রোড এলাকায় চৌধুরী সুলতানা ভবন সংলগ্ন কুচুরিপানার ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে আটক শিউলি।
জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই দুবাই প্রবাসী মো: সোহেল (৩৫) বাংলাদেশে আসে। সোহেল ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তার শিউলি তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে ফেনী জেলার সদর থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত। দেশে আসার পর থেকে স্ত্রীর সাথে নিহত সোহেলের পরকীয়া সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হত। এরই জের ধরে গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাত আনুমানিক বারটায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সোহেল মৌখিকভাবে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। এতে তাদের দাম্পত্য কলহ চরম পর্যায়ে পৌঁছালে বেডে বসে থাকা সোহেলকে তার স্ত্রী পিছন দিক থেকে দা দিয়ে কুপিয়ে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে শিউলি দারোয়ানকে তার বাবা মারা গেছে বলে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পরপরই আসামী রোকেয়া আক্তার শিউলী ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম গিয়ে অবস্থান করে ও সকালে ফটিকছড়িতে পৌঁছে এবং সারাদিন ফটিকছড়িতে থেকে রাত আটটার সময় কুমিল্লার জন্য রওনা করেন অতঃপর রাতের কোনো একসময় কুমিল্লায় চাচার বাসায় আত্মগোপন করে।
উল্লখ্য, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ডাকাত, খুনি, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, মানবপাচারকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।