মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুত্রবধূ সহ পরিবারের লোকজনের সাথে অভিমান করে সেতারা বেগম (৬৭) নামে এক বয়স্ক নারী আত্মহত্যা করেছে। অসুস্থতায় পর্যাপ্ত সেবা না পেয়ে এবং পরিবারের লোকজনের অবহেলা সহ্য করতে না পেরেই এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে। নিহত সেতারা বেগম একই গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের স্ত্রী। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। রোববার (০৯ জুন) দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা।
জানা গেছে, শনিবার দিনে পারিবারিক বিষয় নিয়ে সেতারা বেগমের সাথে তার এক পুত্রবধূর ঝগড়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বাড়ীতে থাকা দুই ছেলে কামাল হোসেন ও মীর হোসেনের কাছে বিচার দিয়েও কোনো শান্তনা না পেয়ে অভিমানে শনিবার দিবাগত রাতের যেকোনো সময় পরিবারের সদস্যদের অগোচরে শয়নকক্ষের জানালার গ্রিলের সাথে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সেতারা বেগম। সংবাদ পেয়ে রোববার সকাল ১১টায় চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মো: বশির আহমেদ সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল শেষে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, পাঁচ ছেলে আর দুই মেয়ে থাকার পরও সেভাবে কেউ বৃদ্ধা সেতারা বেগমের সেবা করতো না। একদিকে বৃদ্ধ বয়স আর অসুস্থতা, অপরদিকে পরিবারের লোকজনের অবহেলা-অবজ্ঞা। বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি তিনি। অসুস্থতা নিয়ে ভীষণ কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছিলেন তিনি। তিন ছেলে প্রবাসে থাকলেও তাকে ঠিকমত চিকিৎসাও দেয়নি পরিবারের লোকজন। এমন মানসিক যন্ত্রণা থেকেই শারীরিক অসুস্থতা আর পরিবারের অবহেলা সহ্য করতে না পেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন সেতারা বেগম।
নিহতের জামাতা মো: বেলাল হোসাইন বলেন, ‘আমার শ্বাশুড়ী দীর্ঘদিন ধরেই কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি আগেও কয়েকবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে ঘোলপাশা ইউপি’র সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাসিমা আক্তার জানান, ‘গতকাল রাতে আমি বাড়ীতে ছিলাম না। সকালে এসে আত্মহত্যার খবর শুনে ঘটনাস্থলে যাই। কেন আত্মহত্যা করেছে এ বিষয়ে পুলিশ ও পরিবারের লোকেরাই ভালো বলতে পারবে।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মো: বশির আহমেদ বলেন, ‘আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে ঘোলপাশা ইউনিয়নের নারায়ণপুর থেকে ষাটোর্ধ্ব এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।’