চৌদ্দগ্রামে আদালতের রায় উপেক্ষা করে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ

0
593

স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আদালতের রায় উপেক্ষা করে নালিশি ভূমিতে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদ রাসেল বেপারী গং নামে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের করপাটি মুক্তিযোদ্ধা বাজারে। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এএসআই আজিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাসেল গংদেরকে দোকানঘর নির্মাণ করতে নিষেধ করাসহ আদালতের চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন।

জানা গেছে, উপজেলার কনকপৈত ইউনিয়নের করপাটি গ্রামের রাসেল বেপারী গং ও কাজী ইউনুস গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। বিবাদমান জায়গা নিয়ে উভয়পক্ষ আদালতে একাধিক মামলাও করেন। গত ২৬ ফেব্রæয়ারি ও ৯ মে আদালত রাসেলদের দায়েরকৃত ১৪৫ ধারা ও ১০৭ ধারার দু’টি পৃথক মামলা (মামলা নং ১২৯২/২২ইং ও ৪০২/২২ইং) খারিজ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২ জুন রাসেল গং বহিরাগত কতিপয় সন্ত্রাসী এনে বিবাদমান জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করার চেষ্টা করে। এতে বাধা প্রদান করলে রাসেল গং প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। হামলায় কাজী ইউনুসের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত ইউনুসকে পরিবারের লোকজন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেয়। ঐ ঘটনায় মৃত একরামুল হক গেদুর ছেলে মো: রাসেল ও মৃত আনু মিয়ার ছেলে আহসান হাবীবসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনের নামে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী কাজী ইউনুস। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলের পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আদালতের চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহবান জানান। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ভোর রাতে একই কায়দায় আবারো রাসেল গং দোকানঘর নির্মাণের কাজ শুরু করতে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগি ইউনুস জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে আগের অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার এএসআই আজিম উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগি ইউনুস ও তার পরিবার। তিনি থানা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রত্যাশা করছেন।

ইউনুসের বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় এতিম হয়ে গেলে আমার দাদা আজমত আলী এ জমিটি আমাদেরকে কবলা দিয়ে যান। গত কিছুদিন পূর্বে রাসেল গং আমাদের বিরুদ্বে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দেয়। এ মামলার খবর শুনে আমি স্ট্রোক করে বর্তমানে প্যারালাইসড হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি আবুল হাশেম ডিলার, শামসুল হক ও হারুনুর রশিদ সহ অনেকেই বলেন, ‘ইউনুস এর বাবার মৃত্যুর পর তার দাদা জীবিত থাকাবস্থায় তাদেরকে এ জায়গাটি দানপত্র কবলা দিয়ে যান। এ জায়গাটি নিয়ে ইউনুস ও রাসেলদের মধ্যে আদালতে মামলা চলমান। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার আগেই উক্ত জায়গায় রাসেল গং ঘর নির্মাণ করছে। যা আদালত উপেক্ষারই শামীল।’

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার এএসআই আজিম উদ্দিন বলেন, ‘থানায় পূর্বের অভিযোগ ও ৯৯৯ এ কল পেয়ে বৃহস্পতিবার আবারো ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। আদালতে মামলা চলমান থাকায় চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থাপনা নির্মাণ না করতে এবং শান্ত থাকার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু রাসেল গং তা মানছেনা।’