স্টাফ রিপোর্টার: দুই সন্তানের জনকের প্রেমে পড়ে বাড়ি ছেড়ে আসলো স্কুল শিক্ষার্থী। কিন্তু পরিবারের বাধার কারণে সংসার গড়ার পরিবর্তে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বিষপান করলো প্রেমিক যুগল। শনিবার তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে স্থানীয়রা।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে দুই সন্তানের জনক মনির হোসেন (২৫) ও সদর দক্ষিণ উপজেলার নবম শ্রেণীর ছাত্রী নাদিয়া আক্তারের (১৭) দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মনির ও নাদিয়ার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার নাদিয়া পালিয়ে মনিরের বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু উভয়ের পরিবার প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় শনিবার তারা বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার শেষে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
নাদিয়ার মামা ইমাম হোসেন সাগর অভিযোগ করে জানান, বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক হয়েও মনির বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল ছাত্রী নাদিয়ার সাথে প্রেমের অভিনয় করে আসছে। তার এ অভিনয়ের ফাঁদে পড়ে যায় নাদিয়া। দুইদিন আগে নাদিয়াকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে মনির হোসেন। এ নিয়ে কুমিল্লার আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারি-আমার ভাগনি মনির হোসেনের বাড়িতে রয়েছে। আমরা তাকে আত্মীয় স্বজনসহ নিতে আসলে দেখি মনির আমার ভাগনিকে জোরপূর্বক বিষপান করাচ্ছে এবং পরে সে নিজেও পান করে নেয়।
এ বিষয়ে প্রেমিক মনির হোসেনের প্রতিবেশি তানভির হোসেন জানান, মনির হোসেন বিবাহিত। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের টানে নাদিয়া একাধিকবার মনিরের বাড়িতে চলে আসে। পরে গ্রামবাসী নাদিয়াকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। শত বাঁধার পরও দুইদিন আগে নাদিয়া আবারও মনিরের বাড়িতে চলে আসে। শনিবার আত্মীয় স্বজনরা নাদিয়া কে নিতে মনিরের বাড়িতে আসে। এসংবাদ পেয়ে নাদিয়া কে নিয়ে পালিয়ে পাশের জমিনে চলে যায় মনির। সেখানে তারা দুইজনেই আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বিষপান করে। পরে গ্রামবাসী ও নাদিয়ার আত্মীয় স্বজন দুইজনকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এস এম আরিফুর রহমান জানান, ‘খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে উভয় পক্ষের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানতে পারি-প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় দুইজনে বিষপান করেছে। ডাক্তারের পরামর্শে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।