স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট (সোমবার) বিকালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের পতনের পর থেকে জনতার রোষানল এড়ানো সহ নিরাপত্তাজনিত কারণে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের অনেক জনপ্রতিনিধি পলাতক রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ রয়েছেন। এছাড়াও অনেক জনপ্রতিনিধি নিজ এলাকায় আত্মগোপনে থাকলেও ভয় সহ বিভিন্ন কারণে ইউপি কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। ফলে দীর্ঘ দুই সপ্তাহ ধরে সেবাবঞ্চিত রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
এদিকে বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানকে মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে, সাধারণ মানুষ বলছে, বিনাভোটের চেয়ারম্যান-মেম্বার হয়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন নিজ এলাকার মানুষের উপর ব্যাপক জুলুম নির্যাতন করেছেন তারা। এছাড়াও দলীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সামাজিক বিচার-ব্যবস্থার মাধ্যমে দুর্নীতি, জরবদখল সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় এখন সকলেই পলাতক রয়েছেন। জনগণ তাদেরকে হাতের কাছে পেলে উত্তম-মধ্যম দিতে পারে। এজন্য ভয়ে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কেউ কেউ ইউপি কার্যালয়ে আসতেও পারেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তের ইউনিয়নের মধ্যে কাশিনগর, শুভপুর, কালিকাপুর, ঘোলপাশা, বাতিসা, মুন্সীরহাট, কনকাপৈত, জগন্নাথদীঘি সহ আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে গত ৫ ও ৬ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা দরজা, জানালা, আসবাবপত্র ভাংচুর সহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র নষ্ট করে। একই সাথে পরিষদের কম্পিউটার আলমিরা, চেয়ার-টেবিল লুটপাট করে নিয়ে গেছে বিক্ষুব্ধরা।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার (১৮ ও ১৯ আগস্ট) উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ইউপি কার্যালয়ে উদ্যোক্তা, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও নেই কোন জনপ্রতিনিধি। আগের মত সরগরম নেই ইউপি কার্যালয়গুলো। যেন সুনশান নীরবতা বিরাজ করছে সেখানে।
কাশিনগর ইউপি সচিব সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে সফলতার পর বিক্ষুব্ধ জনতা কাশিনগর ইউপি কার্যালয়ের দরজা, জানালা, চেয়ার-টেবিল ও কম্পিউটার সহ যাবতীয় আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এর ফলে এখনও পর্যন্ত সেবাগ্রহীতাদের ঠিকমতো সেবা দিতে পারছি না’।
বাতিসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী ফখরুল আলম ফরহাদ বলেন, আমি যেখানেই থাকি না কেন জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। গত ৫ আগস্ট পরিষদের কম্পিউটার সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়েছে। সেগুলো মেরামতের কাজ চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পরিষদের সেবাগ্রহীতারা সরাসরি সেবা নিতে পারবেন।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, ‘সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত জম্ম ও মৃত্যু সনদের সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে উপজেলা থেকে সরকারি কর্মকর্তাগণ যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যান্য সেবাগুলোও পর্যায়ক্রমে শুরু হবে।