স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মো: আব্দুল কুদ্দুস ও সাদ্দাম হোসেন জয় নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিবি’র সোর্স ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস ও সাদ্দাম হোসেন জয় উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা (বাঁকা বটগাছ) এলাকার মৃত মাওলানা এরশাদ এর ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বিজয়পুর রাস্তার মাথা এলাকায় একই ইউনিয়নের জামপুর গ্রামের মৃত নুরুল হক খন্দকারের ছেলে প্রবাসী মো: মুজিবুল হক খন্দকারের নিজ মালিকীয় একটি টিনশেড মার্কেটের সামনে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি প্রবাসী মো: মুজিবুল হক খন্দকার বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগি প্রবাসী মুজিবুল হক তার নিজস্ব জায়গায় সেমিপাকা মার্কেট নির্মাণ করার জন্য একই এলাকার বাবুচি বাজারের মেসার্স হাজী ট্রেডার্স থেকে দুই বান্ডেল রড কিনে আনেন। দোকানদার ভুলক্রমে রডগুলো ভিন্ন ব্র্যান্ডের দিয়ে দেওয়ায় সেগুলো পরিবর্তন করে নিয়ে যাওয়ারকালে অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস ও সাদ্দাম হোসেন জয় নামে দুই ব্যক্তি প্রাইভেটকারযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিজেদেরকে একজন কুমিল্লা ডিবি পুলিশের সোর্স ও অপরজন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় প্রবাসী মুজিবুল হক চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে উপস্থিত স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উত্তেজিত জনতা তাদেরকে আটক করে তাদের ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল ফোন জব্দ করে। পরে মোবাইল ফোন দু’টি রেখে সু-কৌশলে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। যাওয়ার সময় তারা মুজিবুল হককে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে। জব্দকৃত মোবাইল ফোন দু’টি নোয়াবাজার ব্যবসায়ী ও বাজার কমিটির নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস থানায় প্রবাসী মুজিবুল হক খন্দকার, স্থানীয় ব্যবসায়ী সহ উপস্থিত লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। ঘটনার বিস্তারিত কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি মাহবুব হোসেন মজুমদার সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করা হয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগি। স্থানীয়ভাবে বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় ভুক্তভোগি ওই প্রবাসী মঙ্গলবার রাতে আব্দুল কুদ্দুস ও সাদ্দাম হোসেন জয় এর নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগি প্রবাসী মুজিবুল হক খন্দকার বলেন, ‘নিজ মালিকানাধীন জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করতে গেলে আমানগন্ডার আব্দুল কুদ্দুস ও সাদ্দাম হোসেন নিজেদেরকে ডিবি’র সোর্স ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমার নিকট ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের সাথে পুলিশ ও র্যাব প্রশাসনের বড় কর্মকর্তাদের সখ্যতা আছে বলে তারা আমার ক্ষতিসাধন করা সহ প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দেয়। এ ঘটনায় থানা অভিযোগ দিয়েছি। লোকমুখে শুনেছি আব্দুল কুদ্দুস এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী ও তার ভাই সাদ্দাম হোসেন ভুয়া সাংবাদিক। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’
নোয়াবাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘জব্দকৃত মোবাইল দু’টি আমার নিকট রয়েছে। বাজার কমিটির উদ্যোগে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করেছি, সমাধান না হওয়ায় ভুক্তভোগি থানায় অভিযোগ দিয়েছে বলে শুনেছি। ’
এ বিষয়ে কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি মাহবুব হোসেন মজুমদার বলেন, ‘মুজিবুল হক এর মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। জব্দকৃত মোবাইলগুলো মালেক সর্দার এর কাছে রয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘থানায় অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগি প্রবাসী। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’