স্টাফ রিপোর্টার: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই নারী একই পরিবারের চার সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটা মধ্যমপাড়া বানু ভূঁইয়া বাড়ীতে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি রেহেনা বেগম চারজনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো তিন-চারজনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (এসডিআর নং-১৫৬০/২৯.০৪.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগি রেহেনা বেগম পরিবার নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় ও নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটা মধ্যমপাড়া বানু ভূঁইয়া বাড়ীর মরহুম নোয়াব আলী মৃত্যুকালে দুই কন্যা সন্তান রেখে যান। নোয়াব আলীর রেখে যাওয়া বসতভিটায় তার ছোট কন্যা রেহেনা বেগম দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবৎ স্বামী-সন্তান নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন। বাবার রেখে যাওয়া পূরনো বসতঘরটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এক-দেড় মাস পূর্বে নতুন করে ঘরটি নির্মাণ কাজ শুরু করেন রেহেনা বেগম। ইতিমধ্যে ঘরের কাজ প্রায় আশি শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকী কাজও চলমান রয়েছে। ঘটনার দিন গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল অনুমান এগারটায় ভুক্তভোগি রেহেনা বেগমের একই বাড়ীর বাসিন্দা, তার বাবার চাচাতো ভাই আব্দুস সাত্তার এসে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বলেন। এ বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে আব্দুস সাত্তার, তার বড় ভাই রহিম উদ্দিন, ভাতিজা সাইফুল ইসলাম, স্ত্রী তাসলিমা বেগম ও একই এলাকার আবুল বশার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রেহেনা বেগম ও তার পরিবারের লোকজনের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় লাঠি, কাঠ ও লোহার রডের আঘাতে রেহেনা বেগম, তার প্রবাসফেরৎ ছেলে সালেহ আহমদ, ছোট ছেলে মামুন ও কিশোরী মেয়ে শাহিদা মাথায় রক্তাক্ত জখমী সহ গুরুতর আহত হয়। এছাড়াও তাদের সকলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়া ও নীলা-ফুলা জখম হয়। এ সময় তাদের শোর-চিৎকারে পাড়া-প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদেরকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয় স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি রেহেনা বেগম বাদী হয়ে সোমবার রাতেই তার নিজবাড়ীর মৃত চান্দু মিয়ার ছেলে আব্দুস সাত্তার (৫২) ও রহিম উদ্দিন (৫৫), রহিম উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭), আব্দুল মালেকের ছেলে আবুল বশার (৪০) এবং আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৪৫) এর নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো তিন-চারজনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মো: বশির আহমেদ এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম। এ সময় তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মো: বশির আহমেদ জানান, ‘অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। আইনগতভাবে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’